শব্দ : কয়েকটি বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি একত্র হয়ে যদি একটি অর্থ প্রকাশ করে, তবে তাকে বলা হয় শব্দ।
যেমন- ন্ + অ + + অ = নর। স্ + অ + ত্ + আ = লতা।
কিন্তু বর্ণসমষ্টি যদি কোন অর্থ প্রকাশ না করে, তাহলে শব্দ হয় না। যেমন- ক্ + + + অ = কেত।
এখানে কতগুলো বর্ণ একত্র হলেও এগুলো মিলিতভাবে কোন অর্থ প্রকাশ না করায় শব্দ হয়নি।
পদ : বিভক্তিযুক্ত শব্দকে পদ বলা হয়। যেমন- নর + ঔ = নরৌ। এখানে 'নর' একটি শব্দ। এর সঙ্গে 'ঔ'
এই শব্দবিভক্তি যুক্ত হয়ে 'নরৌ' পদ গঠিত হয়েছে।
পদের শ্রেণীবিভাগ : পদ পাঁচ প্রকার বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয় ও ক্রিয়া।
১। বিশেষ্য
যে পদের দ্বারা কোন ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, গুণ, অবস্থা, ক্রিয়া প্রভৃতির নাম বোঝায়, তাকে বলা হয় বিশেষ্য।
যেমন-
ব্যক্তি: গোপালঃ, গোবিন্দঃ, সীতা ইত্যাদি।
বস্তু: বিত্তম, জলম্, অনুম ইত্যাদি।
স্থান: মথুরা, কাশী, গয়া, বৃন্দাবনম্ ইত্যাদি।
গুণ: মধুরতা, চপলতা, মহত্ত্বম ইত্যাদি।
অবস্থা: কৈশোরম্, যৌবনম্, দারিদ্র্যম্ ইত্যাদি।
ক্রিয়া: শয়নম্, দর্শনম্ ইত্যাদি।
২। বিশেষণ
যে পদ বিশেষ্য বা ক্রিয়াপদের গুণ, অবস্থা, পরিমাণ প্রভৃতি প্রকাশ করে, তাকে বিশেষণ বলে। বিশেষণ
প্রধানত দুই প্রকার নামবিশেষণ ও ক্রিয়াবিশেষণ।
নামবিশেষণ : যে পদ বিশেষ্য পদের গুণ, অবস্থা প্রভৃতি প্রকাশ করে, তাকে নামবিশেষণ বলে। যেমন-
ক্লান্তঃ পথিকঃ। গভীরা রজনী। পঞ্চম্ ফলম্।
ক্রিয়াবিশেষণ যে পদ ক্রিয়াপদের অবস্থা প্রকাশ করে, তাকে ক্রিয়াবিশেষণ বলে। ক্রিয়াবিশেষণে দ্বিতীয়া
বিভক্তির একবচন ও ক্লীবলিঙ্গ হয়। যেমন- কোকিলঃ মধুরম্ কৃজতি। বালিকা ধীরম্ গচ্ছতি।
৩। সর্বনাম
যে পদ বিশেষ্যের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলে। যেমন- রামঃ সুশীলঃ বালকঃ, রামঃ
প্রতিদিনম্ বিদ্যালয়ম্ গচ্ছতি, রামস্য চরিত্রম নির্মলম্-এই তিনটি বাক্যে বারবার 'রাম' পদের ব্যবহারে
শ্রুতিকটু দোষ হয়। এজন্য 'রামঃ' পদের পরিবর্তে যদি সঃ (সে) এবং রামস্য (রামের) পদের পরিবর্তে 'তস্য'
(তার) পদ ব্যবহার করা হয়, তাহলে বাক্যগুলো শ্রুতিমধুর হয়। সুতরাং শ্রুতিকটু দোষ পরিত্যাগের জন্য
বিশেষ্যের পরিবর্তে অন্য পদ প্রয়োগ করা প্রয়োজন। বিশেষ্যের পরিবর্তে ব্যবহৃত এই পদগুলোই সর্বনাম।
কয়েকটি সর্বনাম পদ : তে (তারা), তুম্ (তুমি), যঃ (যে), কঃ (কে), কিম্ (কি), অয়ম্ (এই) ইত্যাদি।
৪। অব্যয়
অব্যয় শব্দের অর্থ 'যার ব্যয় নেই। বায় শব্দের অর্থ পরিবর্তন। সুতরাং যে পদের কখনো কোন পরিবর্তন হয়।
না, অর্থাৎ যা সব সময় একই রূপে থাকে, তাকে অব্যয় বলা হয়। যেমন- অধুনা অহং গমিষ্যামি আমি এখন
যাব। তস্যাঃ মুখং পদ্মম্ ইব তার মুখ পদ্মের মত। এখানে 'অধুনা' এবং 'ইব' অব্যয় পদ।
আরো কয়েকটি অব্যয় পদের উদারহণ :
কদা (কখন), কুত্র (কোথায়), অতীব (অভ্যন্ত), চ (এবং), ততঃ (তারপর), তদা (তখন) ইত্যাদি।
৫। ক্রিয়া
যা দ্বারা কোন কাজ করা বোঝায়, তাকে ক্রিয়াপদ বলে। যেমন- সত্যং বদ-সত্য বল। ধর্ম চর-ধর্ম আচরণ
কর। বালকঃ পঠতি-বালকটি পড়ে। বালিকা চন্দ্রম্ পশ্যতি বালিকা চাঁদ দেখে।
অনুশীলনী
اد
শব্দ কাকে বলে? উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও।
পদ কাকে বলে? পদ কত প্রকার ও কি কি?
10
বিশেষ্য পদ কাকে বলে? পাঁচটি বিশেষ্য পদের উদারহণ দাও ।
81
নামবিশেষণ ও ক্রিয়াবিশেষণের পার্থক্য উদাহরণসহ লেখ।
সর্বনাম পদ কাকে বলে? কয়েকটি সর্বনাম পদের উদাহরণ দাও।
অব্যয় কাকে বলে? দুটি অব্যয় পদের বাক্যে প্রয়োগ দেখাও।
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
(ক) বিভক্তিযুক্ত শব্দকে কি বলে?
‘মধুরতা' কোন পদ?
(গ) ক্রিয়াবিশেষণে কোন লিঙ্গ হয়?
সর্বনাম পদ কোন পদের পরিবর্তে বসে?
(ঙ) 'অব্যয়' শব্দের অর্থ কি?
৮।
সঠিক উত্তরটি লেখ :
(ক)
বিভক্তিযুক্ত শব্দকে বলে
(1) কারক
(iii)
পদ
(ii)
সন্ধি
(iv)
প্রত্যয়।
(খ)
'কদা' একটি-
বিশেষ্য পদ
(iii) সর্বনাম পদ
(ii)
অব্যয় পদ
(iv) বিশেষণ পদ।
(গ)
শয়নম্ একটি-
(1)
ক্রিয়া পদ
(ii)
বিশেষ্য পদ
(iii)
অব্যয় পদ
(iv)
বিশেষণ পদ।
(খ)
'পঞ্চম' একটি-
(1)
বিশেষণ পদ
(iii) ক্রিয়া পদ
(ii)
বিশেষ্য পদ
(iv) সর্বনাম পদ ।
'পশ্যতি' একটি
(1)
বিশেষ্য পদ
(iii)
সর্বনাম পদ
(ii)
বিশেষণ পদ
(iv)
ক্রিয়া পদ
আরও দেখুন...